এসো আমার ঘরে ভূগোল ইতিহাস ভাষাসংগ্রাম সাহিত্য সংস্কৃতি রাজনীতি সঙ্কলন অন্যসূত্র
হৃদয়ে রবীন্দ্রনাথ চেতনায় উনিশ
সাম্প্রতিক সংবাদ

০১৫ সালের ১৯ মে কে সামনে রেখে আমরা আবার এই ওয়েবঠাঁইকে হালনাগাদ করছি ।  উনিশের পঞ্চাশতম বছরে যাত্রা শুরু করে আমাদের এই প্রকাশনা মানুষের কাছে বন্ধুতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান রেখেছিল । ভূমিষ্ঠ হওয়ার মুহূর্ত থেকে আমরা বিপুল সাড়া পেয়েওছিলাম । আমরাই সম্ভবত এই ভালোবাসার যোগ্য ছিলাম না ।  নিয়মিত হালনাগাদ না করার ফলে উনিশের মাটিতে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনাবলীর প্রতিফলন আমাদের পাতায় দেখতে পাওয়া যায় নি ।  আমরা যদিও জানতাম যে কোনো ওয়েব প্রকাশনা আসলে কোনো এককালীন প্রকাশ নয়, বরং একটি চলমান প্রক্রিয়া । প্রক্রিয়ার চলমানতার ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের উন্নত করব এই অঙ্গীকারই সম্ভবত ব্যক্ত করতে হবে আমাদের এই উনিশে । এটিও একইভাবে সত্য, উনিশ শুধুমাত্র অতীত ইতিহাস নয় ।  উনিশ ইতিহাসের চলমানতার সাক্ষ্য বহন করে চলেছে প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে । প্রতি বছর উনিশ আসে নতুন নতুন প্রতিকূলতায় নতুন প্রত্যাহ্বান এবং নতুন অঙ্গীকারের প্রত্যাশা নিয়ে । এবার যখন উনিশ এসেছে, তখন বরাক উপত্যকা সহ গোটা রাজ্যের বঙ্গভাষী মানুষ সহ সমস্ত সংখ্যালঘু ভাষাগোষ্ঠীর সামনে বেঁচে থাকার লড়াই ও অস্তিত্বের এক নতুন সংকট নিয়ে হাজির হয়েছে ।  জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নবায়ণ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বাঙালি হিন্দু মুসলমানের এক বড়ো অংশ নিজেদের নাগরিকত্ব হারানোর আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ।এরই মধ্যে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে ১৯৮৫ সালে সম্পাদিত আসাম চুক্তির অগণতান্ত্রিক ৬ নং ধারার বাস্তবায়ন নিয়ে ‘অসমীয়া’ বা ‘খিলঞ্জিয়া বা মূলবাসী’ শব্দের ব্যাখ্যা নিয়ে ক্ষমতার শীর্ষস্তর থেকে ভাসিয়ে দেওয়া নানা বিতর্ক ।  বিগত শতকের সাতের দশকের শেষ এবং আটের দশকের মধ্যভাগ অবধি বিস্তৃত ‘আসাম আন্দোলন’ নামে খ্যাতি পাওয়া উগ্র জাতীয়তাবাদী এবং অগণতান্ত্রিক আন্দোলনের পরিসমাপ্তি ঘটেছিল রাজীব গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের সাথে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলির মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির মাধ্যমে । বহুভাষিক বহুজাতিক বহুসংস্কৃতির আসামে একটি মাত্র ভাষা এবং সংস্কৃতি, অসমীয়ার সরকারি উদ্যোগে রক্ষা ও পরিপুষ্ট করার অঙ্গীকার দেওয়া হয়েছিল বিতর্কিত ৬ নং ধারায় কেন্দ্রের তরফে ।  ১৯৮৫ সালেই এই চুক্তি ঘিরে মহোৎসবের কোলাহলের মধ্যেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষ সহ সমস্ত গণতান্ত্রিক মানুষ ও সংগঠন আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন এই ধারাকে ঘিরে ভবিষ্যতে রাজ্যে আরো বেশি অশান্তি সৃষ্টি হওয়ার ।  চুক্তি সম্পাদনের তিরিশ বছর পর অতীতের সেই বিভীষিকার আশঙ্কা আজ সত্য হয়ে সামনে এসে হাজির হয়েছে ।  এবারের উনিশ এই বাস্তবতার মধ্যে দাঁড়িয়েই পালিত হবে ।  উনিশ নিশ্চয়ই আহ্বান জানাবে সমস্ত ভারতীয় নাগরিকের নাগরিকত্ব সুনিশ্চিত করার ।  উনিশ নিশ্চিতভাবেই মুখর হবে আসামের সমস্ত ভাষাগোষ্ঠীর সুরক্ষা ও প্রসারের সাংবিধানিক সুনিশ্চয়তার দাবিতে ।  উনিশ নিশ্চিভাবেই প্রত্যাশা করবে বাঙালি সমাজের সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক ঐক্যকে যেকোনো মূল্যে রক্ষা করে সমস্ত ভাষা সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে বন্ধুতা ও প্রীতির এক বর্ণময় সমাজ গড়ে তোলার আত্ম-অঙ্গীকারের ।  উনিশ আমার, উনিশ আমাদের, উনিশ সকলের- এই বোধ প্রাণিত করুক সকলকে ।  আরো একবার ধ্বণিত হোক এই অঙ্গীকার আমাদের প্রতিদিনের আলাপচারিতায় আমাদের কবিতা গানে ছবিতে গল্পে নৃত্যে চলচ্চিত্রে । 

...........................

চাইছি তোমার বন্ধুতা . . .
উনিশের ব্লগ্
আগের পৃষ্ঠা